33 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, | সময় ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

কলাপাড়ায় ইউপি নির্বাচনে ৩ ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় নৌকার বিজয় নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা ॥

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ঃ

আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় ৩টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারন নির্বাচনে সরকারী দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অন্ত:র্দ¦ন্দ্ব, বিভাজন, হামলা, মামলা, প্রার্থীর ব্যক্তিগত-পারিবারিক ইমেজ ও অতীত ইতিবৃত্তে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থীদের বিজয় নিয়ে ব্যাপক শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। কলাপাড়ার এ ৩ ইউনিয়নে কালো টাকার প্রভাবমুক্ত, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হলে পাল্টে যেতে পারে সকল হিসাব-নিকাশ এবং মানুষ যদি নিরাপদে ঘর থেকে বেরিয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে তবে নৌকার বিজয় নিয়ে শঙ্কার কথা বলছেন ভোটাররা। নির্বাচনের মাত্র ৪ দিন আগে স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টিয়াখালী ইউনিয়নে সরকারী দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান শিমু, বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান মো: মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন’র প্রার্থী আবু হানিফ রেজা। চাকামইয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে ভোট যুদ্ধে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো: হুমায়ুন কবির কেরামত, বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মকবুল হাওলাদার, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের হাত পাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবদুল জলিল হেলালী, বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো: মজিবর রহমান। নীলগঞ্জ ইউনিয়নে সরকারী দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো: বাবুল মিয়া, বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক মো: নাসির উদ্দীন বিপ্লব, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মো: আনোয়ার হোসেন সিকদার, বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন মো: আলাউদ্দিন মিয়া। বর্তমানে এ ৩ ইউনিয়নে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রচার-প্রচারনা। বাড়ীর উঠানে, চায়ের দোকান কিংবা হাট-বাজারে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদের চুল-চেরা বিশ্লেষন। ভোটারদের এধরনের আলোচনায় উঠে আসছে প্রার্থীদের অতীত ইতিহাসসহ আদি-অন্ত।

একাধিক ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিনিধিকে বলেন, টিয়াখালী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ইমেজ সংকট রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করে পা ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনায় হাজত বাস করায় তিনি ইতোপূর্বে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাসপেন্ড করেছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতিপালনের অভিযোগও রয়েছে। এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের গলার কাঁটা হিসেবে রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো: মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা। যিনি উপজেলা আওয়মীলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মো: মাহবুবুর রহমান তালুকদারের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ সহচর। দলের অনেক নেতা-কর্মী তার পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারনা চালালেও অদ্যবধি দল তাদের ছুঁতেও পারেনি। চাকামইয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে ভোট যুদ্ধে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো: হুমায়ুন কবির কেরামত। যাকেও ক ইতিপূর্বে রিলিফের চাল কেলেংকারীতে কারাবাস করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয় সাসপেন্ড করেছিলো। এখানে আওয়ামীলীগের গলার কাঁটা হিসেবে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন হাওলাদার। এতে সুবিধা জনক স্থানে আছেন বিএনপি সমর্থিত মো: মজিবর রহমান। নীলগঞ্জ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো: বাবুল মিয়া। তার চাচা একসময় এমপি ছিলেন। সেই সময়কার তাদের পারিবারিক ক্ষমতার দাপট যা এখনও মানুষের মুখে মুখে। তারপরও এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের গলার কাঁটা হিসেবে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক মো: নাসির উদ্দীন বিপ্লব। এতে সুবিধা জনক স্থানে আছেন বিএনপি সমর্থিত মো: আলাউদ্দীন মিয়া ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মো: আনোয়ার হোসেন সিকদার।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আবদুর রশিদ গনমাধ্যমকে জানান, ৪র্থ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদের এ নির্বাচনে এ পর্যন্ত আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগে ৪জন চেয়ারম্যান ও ৫ জন মেম্বর প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। আচরন বিধি পরিপন্থী কর্মকান্ড রোধে ভ্রাম্যমান আদালত নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষে সকল প্রস্তুতি রয়েছে। এর কোন ব্যত্যয় হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জগৎ বন্ধু মন্ডল পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত আচরন বিধি পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭জন কর্মী সমর্থককে ৪২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: জসিম সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনী সহিংসতায় এ পর্যন্ত থানায় ৪টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। এসব ঘটনায় বেশ কজন জখম হয়েছেন। যার মধ্যে গুরুতর জখমী রনি ফকির ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা উন্নতির দিকে। পুলিশ এসব ঘটনায় ৫/৭জনকে আটক করেছে। শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে পুলিশ দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে সাদা পোষাকের পুলিশও মোতায়েন রয়েছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন...

হিমশীতল দেশের ফুল এখন যশোরে, আশার আলো দেখছে ফুল চাষিরা

Al Mamun Sun

মোংলায় মাটি কাটা নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত

Al Mamun Sun

ঝিনাইদহে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নৌকা সমর্থক নিহত

Al Mamun Sun
bn Bengali
X