বাদল রায় স্বাধীন:
বর্তমান দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও ও বেশী অংশ নারী। আর এই নারীদের অর্থনৈতিক বা উন্নয়ন মুলক কাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে না পারলে দেশের উন্নয়ন যেমন সম্ভব নয় তেমনি পারিবারিক পর্যায়ে দারিদ্রতা নিরসনে নারী পুরুষ উভয়ে উপার্জনের সাথে জড়িত থাকতে হবে। সে বিষয়টি মাথায় রেখে সন্দ্বীপের ৪ টি ইউনিয়নে রিকল প্রজেক্ট এসডিআই’র উদ্যোগে ও অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় ২৫ টি উৎপাদক দল গঠন করে নারীদের উপার্জনে বিশেষ ভুমিকা রাখছেে।দিচ্ছে এককালীন অফেরত যোগ্য বিজনেস স্ট্রার্টআপ সাপোর্ট সহ ব্যবসা উন্নয়নের প্রশিক্ষনও। সেখানে ব্যবসা উন্নয়নের ছয়টি ধাপ সহ ব্যবসার হিসেব নিকেশ রাখার কৌশলও শিখাচ্ছেন তারা।সেখানে থাকছে পন্য যাচাই,পন্য বিশ্লেষন,বাজার যাচাই, বাজার বিশ্লেষন, কৌশল নির্বাচন ও পরিকল্পনা গ্রহনের শিক্ষাও।দিচ্ছেন পন্যের মুল্য বাড়ানোর জন্য ভেল্যুচেইনের প্রশিক্ষন। অন্যদিকে ব্যবসা সম্প্রসারন এর জন্য স্বল্প সুদে ঋন দানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন ও ঋন প্রাপ্তিতে সহযোগিতাও অব্যাহত রাখছেন তারা।পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন ইনপুট ও আউটপুট মার্কেটের সাথে।
সন্দ্বীপের রহমতপুর, আজিমপুর, মুছাপুর ও কালাপানিয়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায় নারীরা নিজেদের নিপুন হাতের ছোয়ায় তৈরি করছে ধারিপাটি, মোড়া, নকশী কাঁথা,বাঁশ বেতের বিভিন্ন সামগ্রী ও ফেলে দেওয়া প্লাষ্টিক দিয়ে বিভিন্ন শোকেইজিং এর সামগ্রীও। এছাড়াও ব্লক বাটিক, সেলাই,সব্জী উৎপাদন সহ অনেক কর্মকান্ডে জড়িত তারা।
তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় স্বামীর পাশাপাশি নিজে তিন হাজার থেকে শুরু করে ৫/১০ হাজার টাকাও উপার্জন করছেন অনেক প্রডিউসার গ্রুপ সদস্য। যার কারনে বাচ্চার ঔষধ খরচ, বই খাতা, কলম ক্রয় এবং নিজের শখের সামগ্রী ক্রয়ের জন্য স্বামীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়না তাদের।কিছু কিছু নারী স্বামীর অক্ষমতাকে উপেক্ষা করে নিজেই পরিবারের ভরন পোষন চালাচ্ছেন এখন।দায়িত্ব নিচ্ছেন পুরো পরিবারের। নয়তো মানুষের বাড়িতে ঝি এর কাজ কিংবা অন্য মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছায় চলতে হতো তাদের। প্রডিউসার গ্রুপের প্রায় সদস্যের নামে রয়েছে ব্যাংক একাউন্ট তাতে তারা অনেকে সঞ্চয় করছেন, অনেকের রয়েছে ডিপিএস ও। এতে খুশী তার স্বামী সহ পরিবারের লোকজনও। আর এই উপার্জনের কারনে তাদের সমাজে দিন দিন গুরুত্ব বাড়ছে বলেও জানান তারা।নিজেরাও হচ্ছেন বাজার মুখী। উৎপাদিত পন্যের বেশী দাম পেতে বাজারে গিয়ে সরাসরি পন্য বিক্রয় করছেন অনেকে।
এ বিষয়ে প্রকল্প সমন্বয়কারী শ্যামল রায় বলেন নারীরা এখন আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক হত দরিদ্র নারীর উপার্জন তার স্বামীর চেয়েও বেশী। এখন তাদের পৃষ্ঠপোষকতা ও বাজারে অভিগম্যতা বাড়াতে পারলে এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টালে তাদের স্বাবলম্বী হতে বেশী সময়ের প্রয়োজন নেই।
এ বিষয়ে নারী উৎপাদকরা বলেন আমাদের এগিয়ে যেতে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছে রিকল প্রজেক্ট এসডিআই। আমরা রিকলের সকল কর্মকর্তাদের নিকট কৃতজ্ঞ। তাদের কর্ম এলাকা এবং প্রকল্পের মেয়াদ আরো বাড়ালে গ্রামীন নারীরা অনেক উপকৃত হবে।