তাপস কর,ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি।
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার আমতৈল ইউনিয়নের বাহিরশিমুল-চকেরকান্দা এলাকায় কংস নদের ওপর সেতু না থাকায় কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। পারাপারের জন্য নদের ওপর কাঠ ও স্টিল দিয়ে ১৫০ মিটার সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। দুই পাড়ের ১৫টি গ্রামের মানুষ ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন। এছাড়া নদের উত্তরে রয়েছে বাহিরশিমুল উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কওমী মাদ্রাসা। সেতু না থাকায় দুর্ভোগের শেষ নেই শিক্ষার্থীদের।এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সাঁকোটি দিয়ে বাহিরশিমুল, কোনাপাড়া, বিষমপুর, যোগানিয়া, আমতৈল সওয়ারিকান্দা ও চকের কান্দা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ফুলপুরে যাতায়াত করে। অপরদিকে বনোয়াকান্দা, পুটিয়া, বড় পুটিয়া, গোনাপাড়া, মাওরা কান্দি, নিশুনিয়া কান্দাসহ কয়েক গ্রামের মানুষ বাহিরশিমুলসহ হালুয়াঘাটের বিভিন্ন গ্রামে যাতায়াত করে থাকেন।বিষমপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন,আমার বয়স তো শেষ। অনেকেই আসছে,মাপও নিছে। কিন্তু সেতু আর অইলো না। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এখানে একটা স্থায়ী সেতু নির্মাণের।স্থানীয় বাহিরশিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আ. খালেক বলেন,বিভিন্নজনকে বিভিন্ন সময় বলে কোনো লাভ না হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আমরা উদ্যোগ নিই সাঁকো তৈরি করার।গ্রামবাসীর অর্থায়নে প্রথমে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সেতু তৈরি করা হয়। পরে কাঠ ও স্টিলের প্লেনশিট দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু সাঁকোটি-ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দুপাশের কাঠের রেলিং ছিল,ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, সেতু না থাকায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। এটা বেশির ভাগ সময় সম্ভব হয় না। কেউ অসুস্থ হলে যথাসময়ে হাসপাতালে নিতে পারেন না তাঁরা।সরেজমিনে দেখা যায়, সাঁকোটি নড়বড়ে,ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন দুই পাড়ের মানুষ। সাঁকোর দুই পাশে নেই কোনো রেলিংও। চকের কান্দা গ্রামের আ. হাই ক্ষোভ নিয়ে বলেন,যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এই এলাকায় মানুষ আত্মীয় করতে চায় না। আর কত কষ্ট করবে এই এলাকার মানুষ? আমরা আর কিছু চাই না, এখানে একটা সেতু চাই। বানোয়াকান্দা গ্রামের কৃষক আ. হাকিম বলেন,ধান বেচতে গেলে যাওন লাগে নাগলা বাজারে।ধান নিয়ে গেলে মণপ্রতি দিতে হয় ৫০ টাকা। অথচ এখানে সেতু থাকলে খরচ পড়ত মাত্র ১০ টাকা।আমতৈল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান বলেন,কংস নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে প্রস্তাবনা পাঠানো রয়েছে। অনুমতি পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হালুয়াঘাট উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাফুজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।