আপনি হয়তো জানেন পৃথিবীতে যাদের পাড়ার ক্লিনিকগুলোতে ১ডজনেরও বেশী ডাক্তার থাকে সেই সাথে রয়েছে অনেক যন্ত্রপাতি। আপনি জানেন কি করোনার (পিপিই) সঠিক চিকিৎসার জন্য রয়েছে যথেষ্ট টাকা যা তাদের কাছে একটি সুতার কেনার খরচের মতো। আমি পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ আমেরিকার কথা বলছি । দেখুন, সেখানে ১দিনে মারা গেছে প্রায় ১৪৮০ জন। বৃটিশরা তাদের লকডাউনের সময় আরো বাড়িয়েছে। এছাড়াও ক্ষমতাধর দেশ ইতালি, স্পেন, জার্মানি’র মতো দেশে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা ৮ থেকে ৯শ জন। এগুলো অবশ্য আমাদের দেশ থেকে হাজার হাজার কিঃ মিঃ দুরে আছে। আর তাই এটা ভেবেই হয়তো সকালে কিংবা বিকালে বাজারে গিয়ে ভালো কিছু কেনা-কাটা করার কথা ভাবছেন সেই সাথে চায়ের দোকান থেকে চা খেয়েই তারাতারি বাসায় ফিরবেন । আপনি জানেন কি আমি বর্তমানে ভিতু , আমি ভয় পাচ্ছি, হ্যা আমি ভয়ে এটা আপনাদেরকে বলছি। আমি প্রতিনিয়ত আত্নীয়-স্বজনকে হারাতে ভয় পাচ্ছি, হঠাৎ কোনদিন কোন বন্ধুকে খুজে না পাওয়ার ভয় পাচ্ছি। সঠিক চিকিৎসা পাওয়া না পাওয়ার ভয় পাচ্ছি। আমাদের দেশেও মাসের পর মাস লকডাউন চললে না খেয়ে মরতে হবে অনেক মানুষ কে তার ভয় পাচ্ছি। এটা আমার কাম্য নয় তবুও আসুন আমরা সকলে সাবধান ও সচেতন হয় । করোনা ট্র্যাজেডী বড় ভয়ংকর ট্র্যাজেডী । আপনি ভেবে দেখুন আমাদের বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়-৮ মার্চ ২০২০ (৩ জন), প্রথম দিকে এর সংখ্যা খুব কম ছিলো, ২-৩ দিনে এর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১২৩ জনে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যু- ১৮ মার্চ ২০২০ (১ জন) । মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে মৃত্যুর সংখ্যা ১২ জনে দাড়িয়েছে। সারাবিশ্বে (০৭-০৪-২০২০) আজ করোনা রোগে আক্রান্ত প্রায় ১৩ লাখ। মৃত্যুর সংখ্যা হয়েছে প্রায় ৭০ হাজারের বেশী । এই সংখ্যা যে বাড়বে এটা একটি ছোট বাচ্চাও বলতে পারবে এবং তাতে কোন সন্দেহ নয়। আমরা ভাবছিলাম চিনে হয়েছে, কয়েকদিন পরে ইতালি, স্পেন, আমেরিকাতেও হয়েছে। হয়তো এটা আর বাড়বে না। কিন্তু আজ কাতার, কুয়েত, সৌদি এবং কি পাশের দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সাথে আমাদের দেশেও এসে গেছে। আপনি ভাবছেন, লকডাউন কে অপেক্ষা করে সকালে বাজারে গিয়ে টাটকা মাছ, টাটকা সবজি ও কিছু কেক, কলা বা পাওরুটি কিনবেন। কিনতে যাওয়াটা বড় কথা নয়। এটা আমাদের লকডাউন পালন করা নয়। বাড়িতে যা আছে তাই সিদ্ধ করে খাই। আপনাদের কাছে হাত জোড় করে বলছি, লকডাউনটা লকডাউনের মতো করুন । বড় বড় ক্ষমতাধর দেশগুলোর মতো আমাদের দেশেটাতেও আমরা মৃত্যুর মিছিল দেখতে চাই না। তাই আপনার একটু সাবধানতা ও একটু সচেতনতা সুস্থ রাখবে আপনার আমার পরিবারকে, আপনার আমার আত্নীয়-স্বজন, আপনার আমার বন্ধু কে । লকডাউন নিয়ে পুলিশ ও সরকারের সাথে লুকোচুরি খেলবেন না। দোকানী ভাই চায়ের আয়ের টাকায় করোনার চিকিৎসা হবে না তাই আপনি সচেতন ও সাবধান হোন। নিজের সুবিধার কথা ভেবে গোপনে চা-পানের দোকান ও খেলার মাঠে আড্ডা দিয়ে পুলিশ ও সরকারের সাথে লুকোচুরি খেলছেন ” না ” চোর পুলিশ খেলছেন নিজের সাথে, নিজের পরিবারের সাথে, নিজের মৃত্যুর সাথে। প্লিজ বুঝার চেষ্টা করুন। আপনারা টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায় দেখুন বিশ্ব আজ কাঁদছে। আপনার জন্য না হলেও পরিবারের কথা ভেবে লকডাউনটা লকডাউনের মতো করুন। আমরা জানি যে আমরা কেউ চির স্থায়ী নয় তবুও আবারো হাত জোড় করে বলছি প্লিজ বুঝার চেষ্টা করুন। লকডাউন মেনে চলুন। ভয় নয়, সরকারের নির্দেশনা মেনে জনসচেতনতা বাড়ান।
মহান আল্লাহ্ আপনি আমাদের সবাই কে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখুন ।
বিডি সময়ের নিউজ
প্রতিনিধি।
ঠাকুরগাঁও।